Friday, March 28, 2008
বেচুনি
শ্যামলা শুকনো মুখ
দু চোখে ক্লান্তি,
উস্কোখুস্কো চুল কপালে।
কাঁধে ভারি ব্যাগ
দু হাতে থলি,
দ্বিধাগ্রস্থ আঙ্গুল বেল-এ।
ভাত-ঘুম ভাঙ্গা রাগ
কুঞ্চিতো ভুঁরু,
দরজা খুলে হুঙ্কার জোরে।
জ্বালিয়ে খেলে!
কেন গো বাপু
আসো বেচতে ভর দুফুরে?
মিষ্টি কাকুতি,
লিপস্টিক নেলপালিস
একটু দেখাই আপনাকে?
নামি কোম্পানি,
অপূর্ব সব রঙ,
বৌদিকে ভীষন মানাবে।
কালিয়ার হাই
চেপে, বিরক্ত,
ফরেন ছেড়ে এলেবেলে?
সপাটে বন্ধ;
আরো একটা যোগ
'না' সঙ্খ্যার হারে।
ভোরের জল মুড়ি
হজম, টক ঢেকুর,
ক্লান্ত পায়ে পাশের দ্বারে।
Tuesday, March 18, 2008
মেয়ের সব কিছুতেই ভয়
মেয়ের সব কিছুতেই ভয়।
আঁধার জঠর থেকে আলোয়
জন্মাতে সংশয়,
মেয়ের সব কিছুতেই ভয়।
চোখ ফুটলেই লিঙ্গ ভেদের
সঙ্গে পরিচয়,
মেয়ের সব কিছুতেই ভয়।
হাঁটতে শিখে লক্ষণ রেখা
যদি বা লঙ্ঘয়,
মেয়ের সব কিছুতেই ভয়।
বোবা ঠোঁটে জাগলে ভাষা
খণার পরিচয়,
মেয়ের সব কিছুতেই ভয়।
শিক্ষা পেয়ে শিক্ষা দিলে
পুরুষ জাতির সয়?
মেয়ের সব কিছুতেই ভয়।
বেগার খেটে সংসারেতে
অগৌরবে রয়,
মেয়ের সব কিছুতেই ভয়।
পুরুষ অহম অটুত রাখতে
সত্তার অবক্ষয়;
চন্দন সাজে ছবির ফ্রেমে
শ্রাদ্ধ মন্ত্র উচ্চারনে
সম্মানীত হয়।
মেয়ের নেই কোনো আর ভয়!!!
Sunday, March 16, 2008
ব্যালেন্সড ডায়েট
মানুষের পাচনশক্তি বড়ই প্রবল;
গালাগালি ধিক্কার অপমানের গরল
নিমেষে হজম ডাইজেস্টিভ জুসে গুলে,
আপোস-স্থলিতে চালান দেয় ঢেকুর তুলে।
কদাচিৎ যদি মনে গায়ে ধরে জ্বালা
তৎক্ষনাৎ নিন্দা-চর্চার হাজমোলা।
ব্যাস্! নতুন উদ্দমে চলে খানাপিনা,
লড়াই সঙ্ঘর্ষ জিৎ মাৎ, এই নিয়ে জীনা।
তিক্ত অভিজ্ঞতার সাথে অশ্রু নোনতা
মিষ্টি মিথ্যাশ্বাস আর টক ঝাল কপটতা;'
ওয়েল ব্যালেন্সড ডায়েটের মজুদ উপকরণ,
খেয়ে দেয়ে হজম করে পুষ্ট জীবন।
বে-আব্রু
বেঁচে আছি
বেঁচে থাকার স্বপ্ন---
খরায় প্রথম বৃষ্টির মত
দুর্ভিক্ষের দেশে অন্নের মত
মরুভূমিতে শ্যামলীর মত
বন্ধ্যা নারীর কোলে শিশুর মত।
বেঁচে থাকার আদর্শ---
বিনা মুখোশে, বিনা মেকাপে,
পোশাকি কথায় নয়,নগ্ন সংলাপে;
কথা দিয়ে রাখতে, নয় খেলাপে
শেখানো না, নিজস্ব আলাপে।
বেঁচে থাকার সত্য---
বাঁচতে গেলে মুখোশ পরে থাকতে হয়
চক্ষু লজ্যায় অন্যের মন রাখতে হয়
রাজনীতিতে মাছ দিয়ে শাক ঢাকতে হয়
স্বার্থের জন্য পরের কৃতি ছাঁটতে হয়।
আমি বেঁচে আছি---
স্বপ্ন আর আদর্শের দুই ডানা মুড়ে
সমাজের এই কালচক্রে ঘুরে ঘুরে
কদাচিৎ ডানা মেলে যাই উড়ে
বাঁচার মত বাঁচি সেই ইচ্ছাপুরে।
Thursday, March 6, 2008
কথোপকথন
দিনে একবার কথা হয় তাঁর সাথে,
নয় রোজের পূজায়।
তখন ফল, বাতাসা, মন্ত্রে ফাঁকি
চোখ ঘড়ির কাঁটায়।
ঝাঁটা, খুন্তি বা ইস্তিরি হাতে
চর্চা নির্দ্বিধায়।
কর্ম বিদ্যা স্বাস্থের খুঁটিনাটি
কিছু কী বাদ যায়?
কতবার মশলা পোড়ে, জল শুকোয়
বলার মগ্নতায়।
বক্তা অবশ্য আমি, শ্রোতা নয়
স্বার্থপরতায়।
আজ হঠাৎ করাঘাত শুনতে পাই
সন্দেহের দর্জায়।
কথোপকথন এক তরফা কেন?
এ ভারি অন্যায়।
তিনি কী শুধু মূক নন, বধীরও
কান দেন না কথায়?
বলি, একবার বলো, আমি শুনি
মন ভরুক কানায়।
ঠিক তখন এক রঙ্গিন প্রজাপতি
বসে জানালায়।
অপরূপ সুন্দর তার রঙের দ্যুতি
চতুর্দিকে ছায়।
সৃষ্টির সুর তাল রঙের জলতরঙ্গ
বারতা পাঠায়।
নির্বাক নিস্তব্ধ প্রতিধ্বনি হয়,
শুনলি কী আমায়?
Monday, March 3, 2008
আমি
খুঁজছি আমি খুঁজছি দেখো
খুঁজছি আপন সত্তাকে,
খুঁজতে খুঁজতে মরছি ঘুরে
অন্ধ গলির ঘুরপাকে।
পাচ্ছি খুঁজে কন্যা মাতা
পাচ্ছি খুঁজে বউমাকে,
পেলাম খুঁজে স্ত্রী ঠাকুমা
ভিন্ন রুপে গিন্নীকে।
দশটা রুপের ভিড়ের আড়ে
হারাই আপন আপনারে।
আমার আমি'র সঠিক প্রকাশ
কোথায় পাবো, বল না রে?
খুঁজতে খুঁজতে পাকলো মাথা
হোলাম বধির অন্ধ মূক,
দেখলাম তাই হিয়ার মাঝে
পেলাম তাকে, ঘুচলো দুখ।
Subscribe to:
Posts (Atom)