Sunday, March 15, 2009

ছায়া



একটি ফুলের জন্ম হল নন্দন কাননে। প্রজাপতি ও পাখীদের সাথে সে উড়ে বেড়ায় রামধনুর পথে পথে।আকাশের তারাদের ধরে রাখে হাতের মুঠোয়। চাঁদকে জড়িয়ে সে ঘুমাতে যায় আর সূর্যের চুমোয় তার ঘুম ভাঙ্গে।যে বট গাছের ছায়ায় তার ঘর, সে তার গভীর মমতা দিয়ে আগলে রাখে তাকে।

একদিন আচমকা বট গাছের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। আকাশের ভার সইতে না পেরে বটগাছ টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়লো টুকরো হলো সূর্য গ্রহ চাঁদ । রামধনুর পথটাও মিলিয়ে গেল কোথায় যেন। ফুল হবাক হয়ে দেখলো ওর চোখবেয়ে বৃষ্টিঝরছে। প্রতিটা ফোঁটা একটা প্লাবন হয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ওর পরিচিত সব কিছু।

চোখ মুছবে বলে যেই হাতের মুঠো খুলেছে ওমনি তারারা খসে পড়লো জলোচ্ছাসে। সব হারিয়ে যাবার আগে হাতের মুঠোটা তাড়াতাড়ি শক্ত করে বন্ধ করে ফেললো ফুল। চারটে তারা রয়ে গেল ওর হাতের মুঠোয়। ধিরে ধিরে বৃষ্টি বন্ধ হলো, প্লাবন শান্ত হলো, জল সরে গিয়ে এক টুকরো সবুজের হাঁসিতে ফুলের চোখেও সবুজ ফুটলো।

সেই চারটে তারা দিয়ে সে আবার সৃষ্টি করলো আকাশ, সূর্য চাঁদ। ফুলকে ঘিরে এখন কত রঙ্গিন প্রজাপতিরা খেলা করে। ফুল এখন আর নিজে খেলতে পারে না। সে তাদের রামধনু পথের ঠিকানা বাতলে দেয়। কোন পথে গেলে চাঁদের মা বুড়ির দেখা পবে, কোন জঙ্গলে সোনার হরিণ খেলা করে, কোন দীঘিতে রুই কাতলা কথা বলে, সে সবের হদিস দেয় সে।

আমি সেদিন একটা আশ্চর্য্য জিনিস দেখে একেবারে হতবাক হয়ে গেলাম। কালের ভারে নুয়ে ফুল দাঁড়িয়ে দুলছে কিন্তু তার ছায়া একটা প্রকান্ড বড় বট গাছ।

এক মুঠো সবুজ


বৃক্ষ বলি পিষ্ট কলি
সবুজ লোপাট,
অরণ্য নাশ পশু পাখি গ্রাস
শূণ্য এ বাট।
মানুষ শ্রেষ্ঠ বিষ্টু কেষ্ট
উন্নতজাত,
গড়ছে শহর ইঁটের নগর
চাঁদ ছোঁওয়া ছাত।
গড়ায় গলদ ভুললো বলদ
সবুজ মেরে ,
গাছ পাতা বন পাখীর কুজন
নিচ্ছি কেড়ে।
তাদের ছাড়া বাঁচবে কারা,
মানুষ মহান?
দূষণ বায়ু কমবে আয়ু
ধুঁকবে পরাণ।
সব হারাবো কোথায় পাব
বুক ভরা শ্বাস?
একটু ছায়া মেঘের মায়া
ফুলের সুবাস?
বৃষ্টি মাতন ময়ুর মাচন
রামধনু রঙ,
মাঠ ভরা ধান কোকিলের গান
হরিণীর ঢং?
ধুসর ইঁটে দিলাম ছিটে
হালকা সবুজ,
ছাই আকাশে যাক না মিশে
নীল রঙ্গা রুজ।
ডানার মিছিল মাছ কিলবিল
ছোট্ট ফরিং,
ডোরাকাটা ভয় পাশে জলাশয়
ঠোকাঠুকি শিং।
ওই যে শিশু বৃন্দা বিশু
রাখবে ধরে,
পাতা শাক ঘাস বাঘ পাখী হাঁস
মুঠোয় ভরে।