Tuesday, April 29, 2008

শৈশব ও দ্বিতীয় শৈশব


হামাগুড়ি দিয়ে খুঁজে চলে শিশু,
নতুন গন্ধ নতুন স্বাদ।

হতে চায় সে পরিচিত
শৈশবের নির্ভিকতায়।


পৃথিবী তার হাতের মুঠোয়;
ছুঁইয়ে চেখে দেখা চাই সব।

পছন্দের সাথে অমিল হলেই কান্না,
কোল চুমু আদর,

শিশুর হাসিতে শৈশবের জয়।

হামাগুড়ি দিয়ে কী যেন খোঁজে বৃদ্ধ,
হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি?
নাকি,
কোনো অমূল্য রক্তের বন্ধন
যা কবে যেন আলগা হয়ে
ছিন্নভিন্ন ছড়ানো।

একাগ্র একনিষ্ঠ খোঁজ,
নিজেরই বিষ্ঠায় হোয়ে মাখামাখি ;
ঝাপসা চোখের জল আর
গড়িয়ে পড়া লালার পুকুর।


খেয়েই খাবো বলে কান্না,
খেতে দিলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে একাকার।

শিশুসুলভ আচরন--
শৈশবের রত্ন,
দ্বিতীয় শৈশবে তা
বড়ই অবাঞ্ছিত, বড়ই দুঃসহ
বড়ই যন্ত্রনাময়।

Friday, April 25, 2008

ভাবছি


ভাবছি----

আফ্রিকার জঙ্গলে যাবো ঘুরতে।

ধার করে আনবো কিছু

হিংস্র ভালবাসা
হিংস্র স্বাধীনতা
হিংস্র সরলতা
হিংস্র মর্য্যাদা।

সভ্যতার সাথে মিশিয়ে দিলে

যদি---

মানুষ 'মানুষ' হয়ে ওঠে!

Sunday, April 20, 2008

একটি উদ্ভিদের জন্ম



গাছকে সেদিন বলতে গেলাম,
বাঁচতে শেখাও!
ভালবাসতে শেখাও!
ভরপুর অক্সিজেন নিয়ে
সুস্থ থাকতে শেখাও!

দেখি, গাছ ধুঁকছে।
গায়ে বিভৎস ফোঁড়া,
কচি বাকল কুঁচকে বৃদ্ধ
ডালপালাগুলো খাবলানো ন্যাড়া।

'কেমো থেরাপির' পর যেমন হয়!

গাছ কাঁদলো না,
নালিশ জানালো না,
কয়েকটা ফোঁড়ায় ঢাকা
বিবর্ন বিকৃত পাতা
থরথর করে কেঁপে উঠলো।

হয়তো মনের ভুল!
কিন্তু স্পষ্ট শুনলাম
তার অন্তর- নিংরানো দীর্ঘশ্বাস।
শ্বাসটুকু বলে গেল,

বাঁচো, ভালবাসো, সুস্থ থাকো--

কিন্তু একা নয়
আমায় সঙ্গি করে ---

আমি হাত বাড়ালাম।
এক বিন্দু লুকিয়ে থাকা শিশির কণা
টুপ করে পড়লো করতলে।
দু ফোঁটা নোনতা জলের সাথে মিলন হলো,

একটি উদ্ভিদের হলো জন্ম ।



Wednesday, April 9, 2008

অর্কুটেশ্বরী





'সাইবার’' যুগে অসুরদের দুরাচার খুব বেড়েছে। ‘হ্যাকাসুরের’' নেতৃত্ত্বে নের্ট বাসিদের যত্নে সাজানো নগর, বাগান, ছবিঘর, জলসাঘর তছনছ করে দিচ্ছে তারা। ওরা নাকি ‘কোড-সাগর’' মন্থন করে এমন সব গোপনীয় অস্ত্রের সন্ধান পেয়েছে , যা দিয়ে যে কোনো নের্ট বাসির ভোল পালটে, ভাইরাস বোমা নিক্ষেপ করে, সেই অভাগার আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব সকলকে এক নিমেষে নিঃশেষ করে ফেলতে পারে।

হ্যাকাসুরের উচ্চাশা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইদানিং নের্ট ছেড়ে ব্লর্গে গিয়ে, তার চ্যালা চামুন্ডা নিয়ে লীলা-খেলা সেখানেও শুরু করেছে। ব্লগবানেরা অসুরদের অত্যাচারে ব্যতিব্যাস্ত।যতক্ষন ওদের গুন্ডামি নের্টে আবদ্ধ ছিল ততক্ষন তাঁরা অতো গা করেননি। অপ্সরাদের নাচ আর সুরা ছেড়ে কেই বা আজকাল অন্যের চর্খায় তেল দেয়? কিন্তু এখন তো সরাসরি ব্লর্গে ঢুকে পড়েছে ব্যাটারা। আর তো নির্বিকার থাকা যায় না!


ব্লগবানেরা আগেই ভগবানেদের গল্প শুনেছেন, তাই কেউ আর এগিয়ে এসে হ্যাকাসুরকে বধ করার জন্য ভলানটিয়ার করলো না।
অনেক শলা পরামর্শ করে তাঁরা ঠিক করলেন যে সকলে নিজেদের শক্তি এবং বুদ্ধি দিয়ে এক দেবীর সৃষ্টি করবেন, যিনি একাই পারবেন হ্যাকাসুরের মত দুষ্ট অসুরকে দমন করতে। আজকাল মর্তে নারীরা নাকি একই সঙ্গে ঝাঁটা খুন্তি কলম ইঁদুর, আরও কী সব যেন ব্যবহার করছেন। তাই, হ্যাকাসুরকে যদি কেউ বধ করতে পারে, সে একমাত্র নারী।


পুরো সাড়ে আটানব্বই ঘন্টা সাতচল্লিশ মিনিট আর দুই সেকেন্ড লেগেছিল সেই সর্ব শক্তিমতি দেবীকে সৃষ্টি করতে। তার মধ্যেও কিছু সময় নষ্ট হয়েছিল কফি-ব্রেক আর টি-ব্রেক এ। তাছাড়া ব্লগবানেদের মত বিরোধ, তর্কাতর্কি তো ছিলই।কার শক্তির ধার বেশি, কার বুদ্ধির শান বেশি, এই সব আর কি! যাই হোক, শেষ পর্যন্ত এক অপরূপা দশভূজা দেবীর সৃষ্টি হলো। এই সর্বগুণসম্পন্না শক্তিরূপিনীর নামকরন হলো 'অর্কুটেশ্বরী'।

সাইকেডেলিক লাইট, পপ মিউসিক , চিয়ার-লীডারদের নাচ আর হেভি বেটিং-এর মাঝে চলছে যুদ্ধ। সে কী ভয়ানক লড়াই মা গো, দেখলে তোমার গায়ে দেবে কাঁটা। অর্কুটেশ্বরী আবার খুব ফ্যাশান-কনসাস; তাই বিরতির সময় তিনি পোশাক বদলে মেক-আপ একটু টাচ আপ করে আসছেন। হ্যাকাসুরও কিছু কম যান না। তিনিও বিরতিতে একবার পোনি টেল বাঁধছেন, একবার ডান কান থেকে দুল খুলে বাঁ কানে পরছেন।

আমি বর্তমান কাল ব্যবহার করলাম কারণ যুদ্ধ এখনও চলছে। ফলাফল কি হবে কেউ বলতে পারছে না। ভারতীয় জ্যোতিষ, ট্যারো, চাইনিজ এস্ট্রলজি প্রত্যেকেরই ভিন্ন ভিন্ন ভবিষ্য-বাণী। দেখা যাক কী হয়!

জয় অর্কুটেশ্বরীর জয়!! হ্যাকাসুর আর তার নন্দি ভৃঙ্গিদের অত্যাচার থেকে আমাদের বাঁচাও মা!!!!!!!!

Friday, April 4, 2008

সব্বনাশা নেশা


চলছিলো বেশ খাসা,
রেঁধে বেড়ে নিদ্রা দিয়ে
ছবির মত বাসা।

হঠাৎ কী যে হলো,
ইঁদুর হাতে পড়লো ধরা
ওমনি বধু মোলো।

জানলা গেল খুলে,
দেশ বিদেশের বন্ধু আসে
বোতামগুলো ছুঁলে।

গল্প পদ্য ছড়া,
হঠাৎ লাগে জীবনটাকে
রূপকথাতে গড়া।

ভুললো নাওয়া খাওয়া,
রাত্রি দিবস কুটুর কুটুর
লাগলো নেট-এর হাওয়া।

পুড়লো সেদিন মাংস,
একদিন দুধ শুকিয়ে ধোঁওয়া
কেকের বাটি ধ্বংস।

রূপকথাতে রাক্ষস,
গপ গপিয়ে হ্যাক করে খায়
মুখোশধারি খোক্ষস।

জানলা হলো বন্ধ,

ইঁদুরখানা ছেড়ে আবার
সুক্ত মাছের গন্ধ।

Tuesday, April 1, 2008

পদ্য-পার



চিলতে রোদের জাদু-প্রদীপ,
ঘষে দিলাম আলতো হাতে
জিন-এর ছায়া পড়লো তাতে।

হুকুম আকা! বজ্র নিনাদ,
ইচ্ছে আমার মেঘ-গালিচায়
যাবো উড়ে দূর সীমানায়।

সৃজন নদীর পদ্য-পারে,
কাব্যি রাজার সাহিত্য রাজ
ভাবন লিখন শাস্ত্র সমাজ।

রাজা প্রজা ফুল পাখিদের
এক-ই ভাষা ওম-কার রব
ভিন্নতার নেই কলরব।

হাজির শুভ্র মেঘ-গালিচা,
উড়াই তাকে ঝড়ের বেগে
মোহের বাঁধন পিছন রেখে।

কিন্তু এ কী! কোথায় সে দেশ?
ঘুরছি আমি দিশেহারা
নাবিক বিহীন ছন্নছাড়া।

মেঘ-গালিচা ছিন্ন-ভিন্ন,
আঁকড়ে খুঁজি, পাই যদি
পদ্য-পারে সৃজন নদি?